-- কাজী নজরুল ইসলাম তিমির রাত্রি - 'এশা'র আযান শুনি দূর মসজিদে। প্রিয়-হারা কার কান্নার মতো এ-বুকে আসিয়ে বিঁধে! আমির-উল-মুমেনিন, তোমার স্মৃতি যে আযানের ধ্বনি জানে না মুয়াজ্জিন। তকবির শুনি, শয্যা ছাড়িয়া চকিতে উঠিয়া বসি, বাতায়নে চাই-উঠিয়াছে কি-রে গগনে মরুর শশী? ও-আযান, ও কি পাপিয়ার ডাক, ও কি চকোরীর গান? মুয়াজ্জিনের কন্ঠে ও কি ও তোমারি সে আহ্ববান? আবার লুটায়ে পড়ি। 'সেদিন গিয়াছে' - শিয়রের কাছে কহিছে কালের ঘড়ি। উমর! ফারুক! আখেরি নবীর ওগো দক্ষিণ-বাহু! আহ্বান নয় - রূপ ধরে এস - গ্রাসে অন্ধতা-রাহু! ইসলাম-রবি, জ্যোতি তার আজ দিনে দিনে বিমলিন! সত্যের আলো নিভিয়া-জ্বলিছে জোনাকির আলো ক্ষীণ। শুধু অঙ্গুলি-হেলনে শাসন করিতে এ জগতের দিয়াছিলে ফেলি মুহম্মদের চরণে যে-শমশের ফিরদৌস ছাড়ি নেমে এস তুমি সেই শমশের ধরি আর একবার লোহিত-সাগরে লালে-লাল হয়ে মরি! ইসলাম - সে তো পরশ-মানিক তাকে কে পেয়েছে খুঁজি? পরশে তাহার সোনা হল যারা তাদেরেই মোরা বুঝি। আজ বুঝি - কেন বলিয়াছিলেন শেষ পয়গম্বর- 'মোরপরে যদি নবী হত কেউ, হত সে এক উমর।' অর্ধ পৃথিবী করেছ শাসন ধুলার তখতে বসি খেজু...
আমাদের গ্রাম - বন্দে আলী মিয়া আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেউ পর। পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই হিংসা মারামারি কভু নাহি করি পিতা মাতা গুরুজন সাদা মোরা ভরি। আমাদের ছোট গারাম মায়ের সমান আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাচায় যে পান। মাঠ ভরা ধান আর জল ভরা দিঘি চাঁদের আলো লেগে করে ঝিকি মিকি। আম গাছ জাম গাছ বাঁশ ঝার যেন মিলেমিশে আছে ওরা আততিয় হেন। সকালে সোনার রবি পুব দিকে উঠে পাখি ডাকে বায়ু আসে নানা ফুল ফুটে।